চাঁদপুরের এক প্রবাসী তার কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে নিজের বাড়িতে একটি দালান ঘর নির্মাণ করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়নি। রাজমিস্ত্রির প্রতারণার কারণে তিনি সবকিছু খুইয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। প্রতারণা শিকার ফজলুর রহমান নামের ওই প্রবাসী চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডস্থ সাবদী গ্রামের মরহুম মনসুর আহমেদ পাটোয়ারীর পুত্র। বর্তমানে তিনি দেশে ফিরে ওই টাকার জন্য পাগলের মত মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
ঘটনার বিবরণে ভুক্তভোগী প্রবাসী ফজলুর রহমান জানান, জীবিকার প্রয়োজনে দীর্ঘদিন সৌদি আরবে প্রবাস যাপন করেন। প্রবাসের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে মা এবং স্ত্রী সন্তানদের জন্য নিজের বাড়িতে একটি দালান ঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেন। ২০১৬ দেশে ফিরে এ বিষয়ে একই বাড়ির মো. ইমান তালুকদার নামের এক রাজ মিস্ত্রির সাথে আলাপ করেন।
তখন ১৬শ’ স্কায়ার ফুটের ১তলা বিশিষ্ট (ছাদসহ) ওই ভবনটি নির্মাণে প্রতি স্কয়ার ফুটের মজুরি ১৫৫ টাকা নির্ধারন করা। কাজ শুরুর কী কিছুদিন পর ফজলুর রহমান ছুটি শেষ হওয়ায় প্রবাসী ফিরে যান। এই সুযোগে রাজমিস্ত্রির ইমাম তালুকদার প্রবাসী এবং তার বৃদ্ধ মায়ের কাছ থেকে নানান কৌশলে কাজের মজুরীর চেয়েও অতিরিক্ত দেড় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেন।
ভুক্তভোগী প্রবাসী আরো জানান, আমি রাজমিস্ত্রি ইমানকে ফোন করে কাজের হিসাব চাই এবং কোন দেনা পাওনা আছে কিনা সেটা জানতে চাই। এরপর হঠাৎ করেই সে আমার নির্মাণাধীন নতুন ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে রাতের আধারে দুআ শতাধিক বহিরাগত লোকজন নিয়ে আমার অনুপস্থিতে আমার স্ত্রী এবং মাকে অবরুদ্ধ করে। এরপর দরবারের নামে তারা আমাকে কাজের মজুরী হিসেবে আরো ৩৮ হাজার টাকা দেনা দেখায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ওই দরবারে আমাদের এলাকার মনির মেম্বার এবং জাহিদ মেম্বারসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। আমি প্রবাসে থেকে ফোনে হিসেবের কাগজ চাইলে তারা জানায় দেশে ফিরলে আমাকে হিসেবের কাগজ দেওয়া হবে। এরপর তারা আমার মায়ের কাছ থেকে কয়েকভাগে ৩৮ হাজার টাকা আদায় করে। অথচ ২০২১ সালে আমি দেশে আসার পর আজ পর্যন্ত তারা আমাকে হিসাব দেয়নি । আমার হিসেব অনুযায়ী রাজমিস্ত্রি ঈমান তালুকদার আমার কাছ থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বেশি নিয়েছেন। কাজের পূর্ব শর্ত অনুযায়ী ঘরের ভেতর অনেক কিছু সে করেনি। অনেক কাজ অসমাপ্ত রেখেছে। তার প্রতারণার কারনে আমি দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। আমার জন্য তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে সুবিধা দাবী করছি।
এ বিষয়ে প্রবাসী ফজলুর রহমানের মা হাজরা বেগম বলেন, রাজমিস্ত্রি ইমান আমার আমার ফুফাতো ভাই। সে কারনে অনেক বদনাম থাকার পরেও আমার ছেলে তাকে কাজটা দিয়েছে। অতচ আত্মীয় হয়েও সে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঈমান তালুকদারের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন বলেন, এই ঘটনার সবকিছু এলাকার মেম্বার এবং মুরুব্বিরা জানেন। কিছু জানতে হলে তাদের জিজ্ঞেস করুর। ফজলুর রহমান একজন পাগল। সে পাগলের মত কথা বলছে। আমি কোন প্রতারণা করিনি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post