কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দাড়ি রাখতে পারবেন না পুলিশ সদস্যরা। তবে কেউ দাড়ি রাখতে চাইলে অনুমতি সাপেক্ষে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে দাড়ি রাখতে হবে তাদের। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার এই নির্দেশনা দিয়েছেন। গত ২০ আগস্ট ডিএমপি সদর দফতরে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় বিষয়টি আলোচনা হয়। পরে ওই সভার কার্যবিবরণীতে পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা কলামে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
ডিএমপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। বাহিনীর সদস্যদের নিজের মতো করে সাজগোজ বা ফ্যাশন করে চলার কোনও সুযোগ নেই। কারণ, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। এ কারণে বাহিনীর নিয়ম ও বিধান মেনে সদস্যদের চলতে হয়। অনেকেই নিজের ইচ্ছামতো ফ্রেঞ্চকাট বা ফ্যাশনেবলভাবে চুল-দাড়ি রাখেন। সাধারণত হাল-ফ্যাশনের কোনও স্টাইলে দাড়ি রাখাটা বাহিনীর সদস্য হিসেবে সমীচীন নয়। কমান্ড ফোর্স হিসেবে এটা বাহিনীর ভাবমূর্তির বিষয়। এজন্য ধর্মীয় অনুশাসনের বাইরে পুলিশ সদস্যদের দাড়ি না রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাধারণত গোয়েন্দা বিভাগে যারা চাকরি করেন তাদের এ বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়। অনেক সময় ছদ্মবেশ ধারণ করে গোয়েন্দা সদস্যদের কাজ করতে হয়। তারপরও গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের চুল বা দাড়ি বড় রাখতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক পুলিশ সদস্যকে হাস্যকরভাবে নিজেদের উপস্থাপন করার নজির পাওয়া গেছে। বিশেষ করে পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় টিকটক অ্যাপে নিজেদের হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করেছিলেন অনেকেই। পরে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্য বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ডিএমপির ওই কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ এমন একটি পেশা যেখানে নিজেকে সবসময় স্মার্ট ও দায়িত্বশীল অবস্থানে রেখে কাজ করতে হয়। সাধারণ মানুষ নেতিবাচকভাবে গ্রহণ বা সমালোচনা করতে পারে; এমন সব কিছুই পুলিশ সদস্যদের বর্জন বা এড়িয়ে চলতে হয়। সাধারণত হাল-ফ্যাশনের স্টাইলে চুল-দাড়ি রাখার বিষয়টি সামাজিকভাবে ‘বখাটেপনা’র অংশ হিসেবে দেখা হয়। এ জন্যই পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করতে ডিএমপি কমিশনার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুলিশের চুল-দাড়ি, পোশাক-পরিচ্ছদসহ সকল বিষয়ই পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল বুক (পিআরবি), পুলিশ আইনে বলা হয়েছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ পুলিশের ড্রেস রুল-২০০৪-এ বলা হয়েছে, পুলিশের পোশাক-পরিচ্ছদ ও লুক হতে হবে পরিচ্ছন্ন ও মানানসই; যাতে যেকোনও সদস্যকে প্রথম দেখায় স্মার্ট ও চটপটে মনে হয়।
পুলিশের ড্রেস রুল-২০০৪-এ নারী পুলিশ সদস্যদের পোশাক-পরিচ্ছদের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। আগে নারী পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন রঙের হিজাব পরিধান করলেও নির্দিষ্ট রঙের হিজাব পরিধান ও নারী পুলিশ সদস্যদের চুলের আকার অনুযায়ী কীভাবে চুল বাঁধবে সেই নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় কোনও নারী পুলিশ সদস্য অলংকার বা প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারবেন না।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post