মানুষসহ বিভিন্ন মহাকাশযানের পা পড়েছে চাঁদের মাটিতে, মানুষ ও মহাকাশযান রেখে এসেছে নানান স্মৃতিচিহ্ন। প্রায় ৪ লাখ টন মানবসৃষ্ট বস্তু পড়ে রয়েছে চাঁদে ২০১২ সালের এক হিসাব অনুযায়ী। অর্থাৎ চাঁদে আমরা নানা সময়েই বহু আবর্জনা ফেলে এসেছি। চাঁদের মাটিতে পড়ে আছে নানা দেশের ল্যান্ডার, রোভার, যন্ত্রাংশ, ভাঙা মহাকাশযান। ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় আরও বহু বহু জিনিস চাঁদের মাটিতে রেখে এসেছেন মহাকাশচারীরা। মহাকাশচারীদের রেখে আসা স্মৃতিচিহ্নের মধ্যে আছে মল থেকে গলফ বল, পতাকা, পরিবারের ছবিও।
চাঁদে গেলে পৃথিবীর যেসব জিনিস পাওয়া যাবে, তার অধিকাংশই ফেলে এসেছেন মার্কিন মহাকাশচারা। জেনে নেওয়া যাক, চাঁদের বুকে কী কী ফেলে এসেছেন মহাকাশচারীরা।
চাঁদের বুকে নেমে প্রথমেই নজরে পড়তে পারে মহাকাশচারীদের ফেলে আসা মলভর্তি ব্যাগের ওপর। মানুষের মল, প্রস্রাব, বমিভর্তি ৯৬টি ব্যাগ পড়ে আছে চাঁদের বুকে। ফেরার সময় মহাকাশযানের বাড়তি ওজন কমানোর জন্য চাঁদের বুকে এসব বর্জ্যভর্তি ব্যাগ ফেলে এসেছিলেন মহাকাশচারীরা।
চাঁদের বুকে পা রাখা দ্বিতীয় ব্যক্তি এডউইন অলড্রিন এক টুইট বার্তায় লিখেছিলেন, ”ভবিষ্যতে আমার মলভর্তি ব্যাগ যিনি খুঁজে পাবেন, তার জন্য খুব খারাপ লাগছে।’
এছাড়া চাঁদের বুকে গেলে দেখা যাবে যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকার পতাকা। অ্যাপোলো-১১ অভিযানে গিয়ে ১৯৬৯ সালে চাঁদের বুকে দেশের পতাকা রেখে এসেছিলেন আর্মস্ট্রং ও অলড্রিন।
এছাড়া চাঁদের মাটিতে পা রাখলে দেখা পেতে পারেন একটি বাজপাখির পালক ও একটি অ্যালুমিনিয়ামের হাতুড়িররক। অ্যাপোলো-১৫ অভিযানে গিয়ে মহাকাশচারী ডেভিড স্কট একটি পরীক্ষা করেন। একটি হাতুড়ি ও পাখির পালক সমান উচ্চতা থেকে একই সময়ে চাঁদের মাটিতে ফেলে দেন তিনি। মহাকাশের শূন্যতায় দুটো বস্তুই প্রায় একই সঙ্গে চাঁদের মাটি স্পর্শ করেছিল।
১৯৭২ সালে অ্যাপোলো-১৬ অভিযানে চাঁদে গিয়েছিলেন নভোচারী চার্লস ডিউক। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের একটি ছবি। চাঁদ থেকে ফেরার সময় ছবিটি স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে রেখে এসেছিলেন চাঁদের বুকেই।
অ্যাপোলো-১৪ অভিযানের অংশ হিসবে চাঁদে গিয়ে সেখানে গলফ খেলেছিলেন পেশাদার গলফ খেলোয়াড় অ্যালান শেপার্ড। অ্যালান জানিয়েছিলেন, দুটি বলই অনেক দূরে গিয়ে পড়েছিল। তবে কোনো কোম্পানি যাতে মুনাফা না করতে পারে, সেজন্য তিনি কোন কোম্পানির বল চাঁদে নিয়ে গিয়েছিলেন তা কাউকে জানাননি।
এছাড়া অ্যাপোলো-১৫-র নভোচারীরা ‘ফলেন অ্যাস্ট্রোনট’ নামে একটি অ্যালুমিনিয়ামের ভাস্কর্য চাঁদের মাটিতে পুঁতে রেখে এসেছিলেন। এটি বানিয়েছিলেন বেলজিয়ামের শিল্পী পল ভ্যান হোয়েডনক। স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে সেই ভাস্কর্যটি চাঁদে রেখে এসেছিলেন অ্যাপোলো-১৫ অভিযানের অভিযাত্রীরা। যেসব মার্কিন ও সোভিয়েত নভোচারী মহাকাশ জয়ের প্রতিযোগিতায় মারা গেছেন, তাদের স্মরণে বানানো হয়েছিল এই ভাস্কর্য।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post