সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশ শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করলেও সৌদির প্রতিবেশী ও উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম সদস্য ওমান ঈদ উদযাপন করে শনিবার। ফলে, এবছর বিশ্বের অন্যান্য দেশে ২৯ টি রোজা হলেও ৩০ টি রোজা পূর্ণ হয়েছে একমাত্র ওমানে। প্রথম রোজা সৌদি আরবের সাথে একই দিনে শুরু হলেও ঈদ হয়েছে সৌদি আরবের একদি পর অর্থাৎ বাংলাদেশের সাথে মিল রেখে।
দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ’২৯ রমজান সন্ধ্যায় মূল চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, ঈদের চাঁদ দেখা গেছে— এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ তারা পাননি। এ কারণে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয় ওমানে।’ মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলভুক্ত দেশের সংখ্যা মোট ৬টি। দেশগুলো হলো সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন এবং ওমান। এই ছয়টি দেশই উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট গালফ কো অপরারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সদস্য। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে দীর্ঘ স্থলসীমান্তও আছে ওমানের।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শুক্রবার ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। সৌদির পর একে একে আমিরাত, কুয়েত, কাতার ও বাহরাইনের সরকারও একই ঘোষণা দেয়। ওমানই মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের একমাত্র দেশ, যেটি শুক্রবার ঈদ উদযাপন থেকে বিরত থাকে।সচরাচর বাংলাদেশসহ উপমহাদেশীয় অঞ্চলে সৌদি আরবের পরে রোজা এবং ঈদ উৎযাপিত হলেও, ওমানের এই ঘটনা অনেকের মনেই কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে। কেননা, যদিও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য প্রধান দেশের সঙ্গে ওমানও তাদের রমজান মাস গণনা শুরু করেছিলো ২৩ মার্চ হতেই। এটি শুধুমাত্র এবছর ব্যপারটি এমন নয়। বরাবরই ওমান নিজ দেশে রোজা এবং ঈদ পালনের ক্ষেত্রে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখে।
মূলত, মুসলিম বিশ্বের গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির অভিমতে, প্রত্যেক অঞ্চলের বাসিন্দা তাদের আকাশে নতুন চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রমজানের রোজা শুরু এবং মাসের সমাপ্তি ঘটাবেন। এক্ষেত্রে তারা সুরা বাকারার ১৮৯ নম্বর আয়াত এবং সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমের যথাক্রমে ১৯০৯ ও ১০৮১ নম্বর হাদিসকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করেন।
এরই প্রেক্ষিতে প্রতিবছর মুসলিম প্রধান দেশের ইসলামিক পণ্ডিতরা তাদের দেশের মাস গণনার ঘোষণা দিয়ে থাকেন। অমুসলিম দেশগুলোর ক্ষেত্রেও সেখানকার ইসলামিক সংগঠনগুলোর বিশ্লেষণ এবং মতামত অধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে, বৈজ্ঞানিকভাবেই এটি স্বীকৃত যে, ভৌগলিকভাবেই পৃথিবীর সবদেশে একসঙ্গে নতুন চাঁদ দৃশ্যমান হয় না। এসব কারণেই পৃথিবীর একেক দেশে একেকদিন রোজা এবং ঈদের উৎসব পালিত হয়। আর তাই, ওমানে যেহেতু চাঁদ দেখা যায়নি, তাই তারা অন্ধভাবে সৌদিকে অনুসরণ না করে একদিন পর ঈদ পালন করে ওমান।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post