ওমানে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে প্রবাসীদের সাথে ওমানিদের বিয়ের হার। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ওমানি পুরুষদের বিদেশী নাগরিকদের বিয়ে করার সংখ্যা ১২৭ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে ওমানি নারীদের ক্ষেত্রে। বিদেশি নাগরিকদের বিয়ে করা ওমানি নারীর সংখ্যা এই সময়ের মধ্যে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ওমানি পুরুষ ও প্রবাসী নারীদের মধ্যে ১৬৩টি বিয়ে নিবন্ধিত হয়েছে, যা ২০১৫ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৩টি, ২০১৬ সালে ২৫৯টি, ২০১৭ সালে ২৪৮টি, ২০১৮ সালে ২৭৮টি, ২০১৯ সালে ৩৯০টি এবং ২০২১ সালে ৩৭২টি। বুধবার (১৯ এপ্রিল) মাস্কাট ডেইলির এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়।
একাধিক ওমানি নাগরিকের সাথে কথা বলে জানাগেছে, মূলত ওমানি নারী বিয়ে করতে প্রচুর অর্থ গুনতে হয়। ফলে, সামর্থ্য না থাকায় অসংখ্য ওমানি যুবক বিয়ে করতে পারছেনা যথা সময়ে। আর তাই, বিদেশি নারী বিয়ের দিকে ঝুঁকছে ওমানি যুব সমাজ।
এদিকে, সম্প্রতি ওমানের সুলতান বিয়ে সংক্রান্ত একটি নতুন আইন জারী করেছেন। সুলতানের রাজকীয় ডিক্রি অনুযায়ী, এখন থেকে অনুমোদন ছাড়াই বিদেশি নাগরিকদের বিয়ে করতে পারবে ওমানের নাগরিকরা। ১৬ এপ্রিল এমন একটি ডিক্রি জারী করেছেন ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিক।
রাজকীয় ডিক্রিতে বিদেশিদের সাথে ওমানি নাগরিকদের বিবাহ সংক্রান্ত দেশটির আইনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছেন। পূর্বে একজন ওমানি বিদেশি কাউকে বিয়ে করতে হলে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের প্রয়োজন হত। কিন্তু বর্তমানে আর সেই অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
একজন ওমানি চাইলেই প্রবাসী বা অন্য দেশের কাউকে বিয়ে করতে পারবেন। তবে, সেক্ষেত্রে ওমানের আইন এবং ধর্মীয় নীতি লঙ্ঘন হয় এমন কিছু করা যাবেনা বলে নতুন এই আইনে বলা হয়েছে।
বিদেশীদের বিবাহ করা নিয়ে সুলতানের নতুন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ওমানের জনগণ। ওমানের আইনজীবী সালাহ আল মাকবালির মতে, এটা একটা ভালো সিদ্ধান্ত। আমি বুঝতে পারছি না কেন একজন ব্যক্তি তার পছন্দের কাউকে বিয়ে করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাইবেন? এই ওমানি আইনজীবী আরও বলেন, এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশীদের সাথে ওমানীদের বিবাহ নিয়ন্ত্রণের বিধান জারি করার ক্ষমতা পেয়েছিলেন। এখন এর প্রয়োজন নেই।
আরেক আইনজীবী জসিম আল-বালুশি বলেন, বিদেশিদের বিয়ে করতে ইচ্ছুক যে কেউ এখন তা করতে পারবেন, যদি তাদের চুক্তি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে নথিভুক্ত হয় এবং চুক্তিটি ইসলামী আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। নেজুয়া থেকে নাসর আল-বুসাইদি নামে আরেক ওমানি বলেন, নতুন রাজকীয় ডিক্রি বর্তমানে আটকে পড়া অনেকের জন্য বিবাহ প্রক্রিয়াকে সহজতর করবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post