প্রকৃতির ‘রোষানলে’ তুরস্ক, স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটলো দেশটিতে। ২০ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায় প্রদেশে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। যার মাত্রা ছিল ৬.৪। পরে ৩২টি আফটারশক কাঁপিয়ে তুলেছে পুরো এলাকাটি। এরমধ্যে একটি আফটারশকের মাত্রা ছিল ৫.৮।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন ভূমিকম্পে তুরস্কে আরও ৩ জন নিহত হয়েছেন। ভবন ধসে পড়ে অনেকে আটকা পড়েছেন। এছাড়া নতুন কম্পনে তুরস্ক-সিরিয়ায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬৮০ জন মানুষ। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঠিক এই জায়গাতেই ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ওই ভূমিকম্পে শত শত ভবন ধসে পড়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোলো জানিয়েছেন, নতুন ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে আন্তাকিয়া, দেফনে এবং সামানদাগিতে। তিনি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে আপাতত প্রবেশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আন্তাকিয়ায় আগের ভূমিকম্পে যেসব বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, নতুন কম্পনে সেগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে। অপরদিকে হাতেয় এর মেয়র জানিয়েছেন, সেখানে মানুষ আবারও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার গভীরে উৎপত্তি হওয়া এ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল হাতায় প্রদেশের আন্তাকিয়া এবং আদানা শহরের মাঝামাঝি অঞ্চল। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য জানা না গেলেও, আন্তাকিয়ার মধ্যাঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে গোটা এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
নতুন করে আফটারশকের আশঙ্কায় গোটা এলাকায় জারি করা হয়েছে সতর্কতা। জীবনরক্ষায় বাড়িঘর ছেড়ে এরই মধ্যে রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় অনেক বাসিন্দা। ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকারীদের তৎপর হতে দেখা গেছে। গেল ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের পর থেকেই যেসব উদ্ধারকারী ওই অঞ্চলটিতে অভিযান পরিচালনা করে আসছিলেন, তাদেরও নতুন করে বিভিন্ন এলাকায় অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে দেখা গেছে। একের পর এক ভূমিকম্পে গোটা এলাকায় এখন বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post