নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করলেন জেবিন দেব (৪০) নামে এক ওমান প্রবাসী। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রামের বৈলগাঁও গ্রামে। ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে, কক্সবাজারে আবাসিক হোটেল থেকে স্ত্রী-মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের পর ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয়া জানান, ২০০৯ সালে জেবিন দেবের সঙ্গে সুমা দেবের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সাংসারিক জীবনে তাদের যথাক্রমে ১১ ও ৮ বছর বয়সী তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। জেবিন প্রথমে একটা গার্মেন্টসে করলেও অধিক আয়ের আশায় প্রায় তিন মাস আগে ওমান যান। কিন্তু সেখানে কাজের চাপ বেশি হওয়ায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে আসেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তির বরাত দিয়ে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম জানান, তিন মেয়ে ও স্ত্রীসহ কক্সবাজার বেড়াতে যান জেবিন। স্ত্রী সুমা দেব অসুস্থবোধ করায় সকালে বড় ও মেজ মেয়েকে নিয়ে নাশতা করতে বের হন জেবিন। পরে হোটেল কক্ষে ফিরে দেখতে পান বাথরুমে পানির বালতিতে ছোট মেয়ে পড়ে আছে। এ সময় তাকে বালতি থেকে তুলে খাটে এনে দেখেন মেয়ে মারা গেছে। পরে রাগে স্ত্রীকে থাপ্পড় মারলে পড়ে যান। এ সময় গলা চেপে ধরলে সুমা মারা যান।
লিখিত বক্তব্যে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জেবিন দেব পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে কক্সবাজারে এনে হোটেল কক্ষে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিক হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে স্ত্রী সুমা দেব ও ছোট মেয়ে অনামিকাকে হোটেল কক্ষে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে বড় মেয়ে দীপান্বিতা ও জিতুকে নিয়ে বের হন জেবিন দেব। পরে প্রায় তিন মিনিট পর আবার দুই মেয়েকে হোটেলের লবিতে রেখে জেবিন একা রুমে ঢুকেন।
এ সময় ফের ১০টা ২৪ মিনিটে রুম থেকে বের হয়ে লবিতে আসেন। সাড়ে ১০টায় দুই সন্তানকে আবারও লবিতে রেখে লিফটযোগে ১০টা ৩১ মিনিটে ৪১১ কক্ষে যান। ১০টা ৩৮ মিনিটে বের হয়ে কক্ষে তালা দিয়ে হাতে একটি তোয়ালেসহ সিঁড়িযোগে হোটেল লবিতে নেমে দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে আর ফেরেননি। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাদের হোটেল থেকে চেক আউট করার কথা ছিল। তবে দেরি হওয়ায় হোটেলের হাউজ কিপিংয়ের ছেলেরা গিয়ে চেক করে দেখে দরজা বন্ধ। দুপুর সাড়ে ১২টায় মাস্টার কী দিয়ে দরজা খুলে মেঝেতে সুমা দেব ও বিছানায় তাদের কন্যা সন্তান অনামিকার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় সংবাদ পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৩ ফেব্রুয়ারি জেবিনের ফের ওমান যাওয়ার কথা ছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post