সাবেক সেনা কর্মকর্তা মো. মুস্তাফিজুর রহমানের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। শনিবার রাতে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি ভারতের একটি সংবাদ শিরোনামের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেন।
মুস্তাফিজুর রহমান তার ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ভারতের এপিবি আনন্দ নামক একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট শেয়ার করে একটি পোস্ট দেন। এপিবি আনন্দের সংবাদ শিরোনামটি ছিল “বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করতে অপারেশন ‘পেহচান’, নয়ডা থেকে গ্রেপ্তার ১০!”
এই সংবাদের স্ক্রিনশটের ওপর মন্তব্য লিখতে গিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ আশা করছি অচিরেই শেখ হাসিনা অপারেশন পেহচানের আওতায় গ্রেপ্তার হবেন এবং বাংলাদেশে পুশইন হবেন”। তিনি এই মন্তব্যের সঙ্গে একটি হাসির ইমোজি জুড়ে দেন, যা তার বক্তব্যকে আরও ব্যঙ্গাত্মক করে তোলে।
বস্তুত, ভারতের “অপারেশন পেহচান” নামক একটি বিশেষ অভিযান বর্তমানে সেদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য চলছে। নয়ডাতে সম্প্রতি এই অভিযানের মাধ্যমে দশ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করার খবর এপিবি আনন্দ প্রকাশ করে। এই সংবাদের সূত্র ধরেই মুস্তাফিজুর রহমান হাস্যরস করে শেখ হাসিনার গ্রেফতার এবং বাংলাদেশে ফেরত আসার প্রসঙ্গটি টেনে আনেন।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার এই পোস্টটি তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং শেখ হাসিনার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি ইঙ্গিতবাহী বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
উল্লেখ্য, গত বছর ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর প্রকাশ হয়। তারপর থেকে তিনি ভারতেই অবস্থান করছেন।
গণঅভ্যুত্থানকালে হত্যাকাণ্ড ও গুমের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকার তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে।
বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত সরকারও অবগত এবং সম্প্রতি শেখ হাসিনার জন্য ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করা হয়েছে বলে জানা যায়। বাংলাদেশের উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, ভারত সরকার এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়েছে।
মুস্তাফিজুর রহমানের এই ব্যঙ্গাত্মক পোস্টটি মূলত দুইটি বিষয়কে সামনে এনেছে। প্রথমত, এটি ভারতের “অপারেশন পেহচান”-এর মতো অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অভিযান এবং তাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টিকে নির্দেশ করে।
দ্বিতীয়ত, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
যদিও মুস্তাফিজুর রহমানের পোস্টটি আপাতদৃষ্টিতে হাস্যরসপূর্ণ, তবে এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক সংবেদনশীল কিছু বিষয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। অনেকে মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর ও প্রোপাগান্ডামূলক হতে পারে, কিন্তু একই সাথে তা জনমনে কৌতুহল ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই ছিল আপনার দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে একটি নতুন প্রতিবেদন। যদি আপনি অন্য কোনো বিষয়ে সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করতে চান, তবে সেই বিষয়ে তথ্য দিতে পারেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post