প্রবাসে কর্মী পাঠাতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে গত ১০ বছরে ভিসার জন্য হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ১৩.৪ লাখ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢাকা এমআরটি লাইন-৬ (উত্তরা থেকে মতিঝিল) প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় চার গুণ।
সিন্ডিকেট এবং শোষণমূলক নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে অভিবাসী শ্রমিকরা ন্যায্য কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যার ফলে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
গতকাল রবিবার তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি শ্বেতপত্র হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকিং খাতের সুশাসনের অবনতি ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যাংকিং সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
বিগত সরকারের সময় রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ব্যাংকিং খাতে সংকট সৃষ্টি করেছে। খেলাপি ঋণের বর্তমান পরিমাণ এতটাই ভয়াবহ যে, তা দিয়ে ১৪টি ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্প অথবা ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হতো।
আরও পড়ুন
ক্রমান্বয়ে ঋণখেলাপি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়েছে এবং মূলধন উৎপাদনশীল খাত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “বর্তমানে খেলাপি ঋণের হার সাড়ে ১২ শতাংশ হলেও, এটি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে পৌঁছানোর ঝুঁকি রয়েছে।
এর একটি বড় অংশ এস আলম এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মতো কিছু বৃহৎ গ্রুপের ঋণ। এসব ঋণ ২০১৭ সালের পর নেওয়া হয়েছে, যা দেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে।”
প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন সাথী এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এই শ্বেতপত্র দেশের অর্থনৈতিক খাতের গভীর সংকট এবং সুশাসনের অভাব তুলে ধরেছে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।