পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য দুঃসংবাদ

পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য দুঃসংবাদ

চলমান অভিবাসন আবেদনের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে পর্তুগাল সরকার। গত সোমবার (৩ জুন) রাত ১২টার পর থেকে প্রবেশ করা যাচ্ছে না অভিবাসন আবেদনের ওয়েব সাইট (সেফ)-এ।

এতে পর্তুগালে অবস্থানরত নতুন করে আবেদন করতে যাওয়া বাংলাদেশিসহ অভিবাসন প্রত্যাশীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

দীর্ঘদিন ধরেই পর্তুগালে অভিবাসন নীতিমালা পরিবর্তনের গুঞ্জন ছিল। মার্চে ক্ষমতায় আসার পরই মন্টিনেগ্রো সরকার এই পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছিল। এ প্রেক্ষিতে ৩ জুন এ বিষয়ে ঘোষণা আসে।

পর্তুগালে অভিবাসন প্রত্যাশীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন নতুন এই সিদ্ধান্ত। যারা নতুন করে পর্তুগালে প্রবেশ করেছেন কিন্তু আবেদন করতে পারেননি তাদের ভাগ্যে কী ঘটবে তা নিয়ে চলছে আলোচনা।

বাংলাদেশি অধ্যুষিত পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের মার্তিমনিজ এলাকায় কথা হয় অভিবাসন প্রত্যাশীদের সঙ্গে। ইউরোপে সহজে বসবাস করতে ও কাজের সন্ধানে পর্তুগালে এসেছেন তারা। এদের কেউ এসেছেন ভ্রমণ ভিসা নিয়ে।

কেউবা আবার অন্য দেশ থেকে পর্তুগালে এসেছেন। তাদের অনেকেই খরচ করে ফেলেছেন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। কেউ কেউ ইউরোপের অন্য দেশে বৈধ হতে না পেরে পাড়ি জমিয়েছেন পর্তুগালে।

টাঙ্গাইলের তুহিন মাহমুদ ভ্রমণ ভিসায় এসেছিলেন সেনজেনভুক্ত একটি দেশে। ইউরোপে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে গত ১ জুন পর্তুগালে আসেন তিনি। তবে অভিবাসন আবেদনের সুযোগ বন্ধ হওয়ায় স্বপ্ন ভঙ্গ হলো তার।

তুহিন মাহমুদ বলেন, দেশের চাকরি ছেড়ে অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম। তবে নতুন নীতিমালার কারণে আটকে গেলাম। এখন আমি কী করব তা বুঝতে পারছি না।

লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি এসেছিলেন আব্দুল জলিল। ইতালিতে বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়া ৮-১০ বছর হওয়ায় সহজ পথ খুঁজছিলেন তিনি। পর্তুগালের অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় এসেছেন দুই সপ্তাহ আগে। তবে অভিবাসন সংস্থায় আবেদন জমা দিতে না পারায় আবারও অনিশ্চয়তার অতল সাগরে পড়লেন তিনি।

যারা পর্তুগালে আছেন কিন্তু আবেদন করতে পারেননি তাদের ভাগ্যে কী ঘটবে এমন প্রশ্নের জবাবে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ফ্লয়েনটেকোর পরিচালক আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, এরইমধ্যে যারা আবেদন (সেফ এন্ট্রি) করেছেন তাদের কোনো শঙ্কা নেই।

তবে যারা আবেদন করতে পারেননি কিন্তু পর্তুগালে অবস্থান করছেন তাদের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে এ বিষয়ে পর্তুগাল সরকারের নির্দেশনা প্রয়োজন।

এর আগে, অভিবাসন ইস্যুতে ৪১টি প্রস্তাব কাউন্সিলর মিনিস্টাররা পাস করার পর সোমবার রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হয়। বিষয়টি দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম প্রকাশ করে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনেগ্রো সোমবার বলেছেন, পর্তুগালের দরজা বন্ধ হচ্ছে না। তবে যে রকম অরক্ষিত ছিল এখন আর সে রকম থাকবে না।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পর্তুগাল আসা যাবে, তবে থাকতে হবে কাজের কন্ট্রাক্ট ও আবাসনের নিশ্চয়তা। চাকরি বা নিয়োগ দেওয়া কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও কড়া নির্দেশনা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, এরইমধ্যে বৈধ হওয়ার আশায় থাকা অভিবাসীদের কাছ থেকে ৩০ মিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করে সরকারি কোষাগারে জমা করেছে পর্তুগালের অভিবাসন সংস্থা আইমা। এখনো ৪ লাখের বেশি আবেদনের নিষ্পত্তি করতে কাজ করছে সংস্থাটি।

 

আরও দেখুনঃ

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Probashir city web post