বিদেশে কাজ করতে যাওয়া বহু নানা দুর্ঘটনা কিংবা অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেন। প্রতিদিনই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দেশে ফিরে আসছেন এসব প্রবাসী, তবে জীবিত নয়—লাশ হয়ে। একজন প্রবাসীর মৃত্যু হলে তাঁর মরদেহ দেশে আনতে পরিবারকে নানা ধাপে পার হতে হয়, যার কারণে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় স্বজনদের।
মরদেহ দেশে আনতে প্রথমেই সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসকে বিষয়টি অবহিত করতে হয়। এরপর স্থানীয় হাসপাতাল ও পুলিশ কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর কারণ ও পরিস্থিতি যাচাই করে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন তৈরি করে। নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দূতাবাসে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন।
পরবর্তী ধাপে মরদেহ পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে মৃত্যুসনদ, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট (প্রয়োজনে), ভিসা ও কাজের অনুমতিপত্র। এসব কাগজপত্রের ভিত্তিতে দূতাবাস ‘নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (NOC) ইস্যু করে এবং স্থানীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ মরদেহ দেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন
মরদেহ যথাযথ নিয়মে প্যাকিং করা হয়—প্রথমে কাফনে মোড়ানো, পরে কফিনে রাখা হয় এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ফ্রিজিং বক্সে প্রস্তুত করা হয় বিমানযাত্রার জন্য। টিকিট সংক্রান্ত খরচ অনেক সময় নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রবাসীর জীবনবিমা থেকে বহন করা হয়। তবে এসব না হলে পরিবার, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বা দূতাবাস অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে।
সব প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দেশে পৌঁছালে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দর থেকে তা গ্রহণ করেন। এ সময় রাষ্ট্রীয় বা প্রবাসী কল্যাণ সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এ পুরো প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ও মানসিকভাবে ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে প্রবাসীর পরিবার ও স্বজনদের জন্য।