বিদেশে লোক পাঠিয়ে বৈধ কাগজপত্র দিতে দেরি করায় মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে এক ব্যক্তিকে চলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে টেনে হিঁচড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার নশরৎপুর স্টেশনে বগুড়া থেকে সান্তাহার অভিমুখী একটি কমিউটার ট্রেনে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা এবং সমালোচনা।
ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মতিউর রহমান। তার বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামে। ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে অনেকেই মতিউরকে চোর এবং ছিনতাইকারী বলে দাবি করছেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মতিউরের পরিবারের সদস্যরা।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, মতিউর পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। দুই বছর আগে দূতাবাস এবং এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কাজ করছেন। ২০ দিন আগে বগুড়ার আদমদিঘীর সজীব হোসেনকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। সৌদি আরবে গিয়ে সজীবের বৈধ কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা ৭-৮ দিন আগে মতিউরের বাড়ি গিয়ে কাগজপত্রের বিষয়ে জানতে চায়। এ নিয়ে সেখানে ঝামেলা হলে বগুড়া থেকে ট্রেনে মতিউরকে একা পেয়ে সজীবের ছোট ভাই রাকিব এবং সজীবের শ্যালকরা মিলে মোবাইল চোর এবং ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ মতিউরের পরিবারের।
আরও পড়ুন
ভুক্তভোগীর ছেলে আহসান হাবিব জানান, তার বাবা খুব কষ্ট করে প্রায় ৪-৫ মিনিট ট্রেনের সঙ্গে ঝুলে ছিল। এক পর্যায়ে ট্রেনটি আদমদিঘী উপজেলার নশরৎপুর স্টেশনে এলে সেখানকার প্লাটফর্মের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সে ট্রেনের নিচে পড়ে যায়। তবে এরপরেও কোনরকম প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু সেখানকার উৎসুক জনতা মতিউরকে ছিনতাইকারী ভেবে বেধরক মারধর করতে থাকেন। তিনি এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।