অটোরিকশা চালক সোহেল রানা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই ফোম, কর্কশিট, সাইকেলের স্পোক, ফ্যান মটর, স্যান্ডেলের সোল, জিআই তার, আটা ও বাসসহ বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে বিমান তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
সোহেল রানা ইতিমধ্যে পরপর দুইটি বিমান তৈরি করে সফলভাবে উড্ডয়ন ও অবতরণ করিয়েছেন। রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে চালিত তার তৈরি বিমান দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন বহু মানুষ। তার স্বপ্ন বিমানের পাইলট হওয়া, তবে অভাবের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেলেও সবার সহযোগিতায় সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে চায়।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা এলাকার সোহেল রানার বাবা গ্রামে গ্রামে ফেরি করে মালামাল বিক্রি করেন এবং মা গৃহিণী। অভাবের কারণে সোহেল এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অটো রিকশা কিনে চালান এবং এর মাধ্যমে সংসারের খরচ জোগান।
আরও পড়ুন
সোহেল জানান, ছোটবেলা থেকেই তার বিমান তৈরির স্বপ্ন ছিল। ইউটিউব ও মানিকগঞ্জের একজনের বিমান তৈরি দেখে তার আগ্রহ আরও বাড়ে। অভাবের মধ্যেও তিনি চেষ্টা চালিয়ে যান। বর্তমানে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ২১ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ২৮ ইঞ্চি প্রস্থের ৩৮০ গ্রাম ওজনের একটি বিমান তৈরি করেছেন, যা সফলভাবে উড্ডয়ন ও অবতরণ করে। এর আগে তিনি ২৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ৪২ ইঞ্চি প্রস্থের একটি বিমান তৈরি করেছিলেন এবং সেটিও সফল হয়েছিল।
তার তৈরি বিমানটি রিচার্জেবল ব্যাটারিতে চলে এবং রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে এর গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা লাগালে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও দেখা সম্ভব।
সোহেল রানা বলেন, তিনি পড়াশোনা করে পাইলট হতে চান এবং বিমান তৈরির জন্য সহযোগিতা পেলে আরও ভালো কিছু করে দেখাতে চান।
সোহেল রানার মা জানান, অভাবের কারণে তার ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। ছোটবেলা থেকেই সে বিভিন্ন খেলনা বিমান তৈরি করত।
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জানান, সোহেল মেধাবী এবং আর্থিক কারণে তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সে অটো চালানোর পাশাপাশি বিমান তৈরি করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তারা সোহেল রানার প্রতিভা দেখে মুগ্ধ এবং তাকে সহযোগিতা করবেন।