নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে অংশ নেয় হেফাজতে ইসলাম। মহাসমাবেশে যাওয়ার পথে সংগঠনটির নেতারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানান, নারী সংস্কার কমিশনের ‘খপ্পর’ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি ড. ইউনূস এই পথ থেকে সরে না আসেন, তবে তার পরিণতি শেখ হাসিনার চেয়েও খারাপ হবে।
আমির আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে হেফাজতের নেতারা বলেন, ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো নীতি বাস্তবায়ন করার সাহস সরকার যেন না দেখায়। তারা অবিলম্বে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনসহ কমিশন বাতিলের দাবি জানান। একইসঙ্গে শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনার বিচারও দাবি করেন বক্তারা। তারা প্রশ্ন তোলেন, অন্যান্য গণহত্যার বিচারের জন্য কমিশন গঠন করা হলেও শাপলা চত্বরের ঘটনার তদন্তে কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
হেফাজত নেতারা অভিযোগ করেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করা হলেও তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো এখনো বহাল রয়েছে, যা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করে তারা বলেন, এই কমিশনের সদস্যরা নারী নাকি পুরুষ, তা বোধগম্য নয়। তবে তাদের প্রস্তাবিত সংস্কার কোরআন-সুন্নাহবিরোধী এবং এই প্রতিবেদন পাস হলে জীবন দিয়ে তা প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দেন তারা। এমনকি প্রয়োজনে ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণারও হুমকি দেন হেফাজত নেতারা।
আরও পড়ুন
মহাসমাবেশ থেকে ফিলিস্তিন ও ভারতে ‘মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধে’ সরকারকে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তবে অধিকাংশ বক্তার মূল মনোযোগ ছিল নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ও এর প্রতিবেদনের বিরোধিতার ওপর। হেফাজতের পক্ষ থেকে উত্থাপিত চার দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ও এর প্রতিবেদন বাতিল, সংবিধানে বহুত্বের পরিবর্তে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার ও গণহত্যার বিচার, এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে সরকারের ভূমিকা নিশ্চিত করা।