বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়ে হামলার শিকার হন মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবক আল আমিন মন্ডল (২৫)। গত ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, শনিবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর দুর্গম রাখালগাছি চরে এই ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পর নদীতে ঝাঁপ দিলে তিনি নিখোঁজ হন। রবিবার দুপুর ১টার দিকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত আল আমিন পাবনার আমিনপুর থানার সিদ্দিক নগর রামনারায়নপুর গ্রামের আবু বক্কর মন্ডলের ছেলে। তিনি সাত বছর পর চার মাস আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু বক্কর জানান, আল আমিন গত শনিবার বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে তার এলাকা রাখালগাছি চরে আসেন। এরপর বিকেল ৪টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালায়।
স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার দুপুরে আল আমিন তার মামা লিটন, বোন আকলিমা, ফুফাতো বোন জামাই মেগা সরদারসহ কয়েকজন ঢালারচর গ্রামের জনৈক খৈয়মের বাড়িতে পাত্রী দেখতে যান। পাত্রী দেখা ও খাওয়া দাওয়া শেষে ফুফাতো বোন জামাই মেঘা সরদারের মোটরসাইকেলে চড়ে আল আমিন পাশের গোয়ালন্দের রাখালগাছি বাজারে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে পাবনার আমিনপুর থানার কোমরপুর গ্রামের শাহ আলী (৩০), রবিউল ইসলাম (৩৫), ঠান্ডু, জুয়েল ফকির, সেলিমসহ অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ যুবক চারটি মোটরসাইকেলযোগে রাখালগাছি বাজারে আসেন এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই আল আমিনকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে ছুরিকাঘাত করলে তা তার মুখে লেগে মারাত্মক জখম হয়।
আরও পড়ুন
এ সময় আল আমিন প্রাণ বাঁচাতে পাশের যমুনার শাখা নদীতে ঝাঁপ দেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও হামলাকারীদের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের ভাষ্য, ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে শাহ আলী আল আমিনের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আল আমিনকে মুঠোফোনে গালিগালাজ করে হুমকি দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়। অভিযুক্ত শাহ আলী পাবনার আমিনপুর থানার কোমরপুর গ্রামের আলম শেখের ছেলে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম জানান, চার মাস আগে আল আমিন দেশে ফেরেন। ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে স্থানীয় শাহ আলী, রবিউলসহ কয়েকজন তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় উভয়ের মধ্যে মুঠোফোনে কথা কাটাকাটি হয়। গত শনিবার বিকেলে রাখালগাছি এলাকায় ঘুরতে এলে শাহ আলীসহ কয়েকজন আল আমিনকে মারধর এবং ছুরিকাঘাত করে। প্রাণ রক্ষায় তিনি নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, কাজিরহাট নৌ-পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতা চালায় এবং রবিবার দুপুর ১টার দিকে নদীতে ডুবন্ত অবস্থায় হাজারি বড়শির সঙ্গে আটকে গেলে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে এবং থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।