বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচারের নতুন এক পদ্ধতি প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি এক বাংলাদেশি বাবা তার ছেলের একটি সেমিস্টারের টিউশন ফি হিসেবে ৪০০ কোটি টাকা বিদেশে পাঠানোর ঘটনা সামনে এসেছে। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “টাকা পাচারের এই ঘটনাটি অত্যন্ত ইনোভেটিভ পদ্ধতিতে করা হয়েছে। আমরা আগে জানতাম, ওভার ইনভয়েসিং, আন্ডার ইনভয়েসিং, ব্যাংকিং সিস্টেম বা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার হয়। কিন্তু এবার দেখা গেছে, সন্তানের পড়ালেখার নামে একটি সেমিস্টারের ফি বাবা ৪০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। পৃথিবীতে কারও টিউশন ফি এত টাকা হতে পারে না।”
এনবিআর চেয়ারম্যানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, টাকা পাচারের এই ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, টাকা পাচার রোধ ও পাচারকৃত টাকা ফেরত আনতে সরকার ইতিমধ্যে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে ১১ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এই টাস্কফোর্সের লক্ষ্য হলো বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় পাচারকৃত টাকা ফেরত আনতে একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই আইন চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়াও, সরকার ও টাস্কফোর্স ইতিমধ্যে ২০০টি আন্তর্জাতিক আইন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছে। এর মধ্যে ৩০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার প্রক্রিয়া চলছে। এই আইন প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার চেষ্টা করা হবে।
শফিকুল আলম বলেন, “টাকা পাচার রোধ ও পাচারকৃত টাকা ফেরত আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।”
এই ঘটনায় দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে একজন ব্যক্তি এত বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করতে সক্ষম হলেন? এ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের নেতারা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
