নরসিংদীর রায়পুরায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। শিরিনা বেগম নামে এক মায়ের বিরুদ্ধে উঠেছে নিজের তিন বছর বয়সী শিশুপুত্র আনাস মিয়াকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ। গতকাল শনিবার (১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ মির্জানগর এলাকায় এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে।
নিহত শিশু আনাস মিয়া ওই এলাকার সৌদি প্রবাসী ডালিম মিয়ার একমাত্র সন্তান। পাঁচ বছর আগে রায়পুরার হাইরমারা এলাকার শিরিনা বেগমকে বিয়ে করেন ডালিম মিয়া। বিয়ের তিন বছর পর জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান তিনি। এরপর শিরিনা তাদের একমাত্র সন্তান আনাসকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন।
শনিবার রাতে শিরিনা নিজ ঘরে আনাসকে কুপিয়ে হত্যা করার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এ সময় পাশের কক্ষে তারাবি নামাজ আদায় করছিলেন শিশুটির দাদি। চিৎকার শুনে ছুটে এসে তিনি নাতির রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। শিশুটির দাদি জানান, তিনি বুঝতে পারেননি কেন শিরিনা নিজের সন্তানকে হত্যা করলেন। ঘটনার পর থেকে শিরিনা পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রস্তুত করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে এবং বিস্তারিত তথ্য তদন্তসাপেক্ষে জানানো হবে। এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা হয়নি এবং নিহতের মা শিরিনা বেগম পলাতক রয়েছেন।
এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনরা এই ঘটনায় হতবাক ও শোকাহত। তারা জানান, শিরিনা বেগমের আচরণে আগে থেকে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। তবে কেন তিনি নিজের সন্তানের জীবন নিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সকলের মনে। এই ঘটনা সমাজে মাতৃস্নেহের বন্ধন নিয়ে নতুন করে ভাবনার জন্ম দিয়েছে।
একটি শিশুর নির্মম মৃত্যু এবং তার পিছনে লুকিয়ে থাকা রহস্য সমাজকে নাড়া দিয়েছে। এই ঘটনার সত্যতা ও কারণ উদঘাটনে পুলিশের তদন্ত চলছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের গল্প কী, তা জানার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। একটি শিশুর জীবন হারানোর এই মর্মান্তিক ঘটনা সমাজের জন্য একটি বড় প্রশ্ন রেখে গেল।