চট্টগ্রামের পতেঙ্গা লিংক রোড এলাকায় শাহ আমানত বিমানবন্দরের কর্মচারী ওসমান সিকদার খুনে তার দুই সহকর্মীর নাম উঠে এসেছে। এ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে তারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেননি।
পুলিশের অভ্যন্তরীণ একটি সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেন চারজন। ঘটনার আগে হুন্ডির ৩০ লাখ রিয়াল নিয়ে ওসমানের সঙ্গে তার প্রতিপক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ওসমান সিকদারসহ সিভিল এভিয়েশনের বেশ কয়েকজন কর্মচারী বৈদেশিক মুদ্রা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি ওসমানের সঙ্গে ফটিকছড়ির বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে ৩০ লাখ রিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। কথা ছিল ওসমান রিয়ালগুলো নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু ওসমান রিয়ালগুলো সেই যাত্রীদের দেননি। তিনি প্রচার করেন রিয়ালগুলো গোয়েন্দা পুলিশ ছিনিয়ে নিয়েছে।
আরও পড়ুন
পরবর্তীতে ওসমানের কাছ থেকে রিয়ালগুলো ফেরত পেতে চাপ দিতে থাকে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে পিটিয়ে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষ। এরই ধারবাহিকতায় গতকাল শাহ আমানত বিমানবন্দর সংলগ্ন লিংকরোড এলাকার একটি স্থানে নিয়ে তাকে পেটানো হয়। মারধরে অংশ নেয় চারজন। এই মারধরের একপর্যায়েই মারা যান ওসমান সিকদার।
ওসমান সিকদারের গ্রামের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায়। তিনি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশনে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এই বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পরিচালক সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করেন। এ ঘটনায় গতকালই (বৃহস্পতিবার) ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের দুই কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাস্থলে তাদের একজনকে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে। আরেকজন লেনদেনের বিষয়টি আগে থেকে জানতেন। তবে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত এটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য নেওয়া যায় কি না এজন্য আটক করা হয়েছে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, হুন্ডির ৩০ লাখ রিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হন ওসমান সিকদার। মূলত মুদ্রাগুলো অবৈধ পন্থায় বিমানযাত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কথামতো এগুলো বিমানযাত্রীকে দেননি ওসমান। আবার এগুলো ফেরতও দেননি। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হন তিনি।