স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে করোনা পরীক্ষার সনদ ছাড়াই যাত্রী পরিবহন করায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে জরিমানা করেছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ম্যাজিস্ট্রেট আলী আফরোজ এ জরিমানা করেন৷
জানা গেছে, দুপুর দেড়টায় রিয়াদ থেকে চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। ১০ জন যাত্রী ছাড়া সব যাত্রীর সঙ্গে কোভিড শনাক্তকরণের জন্য নির্ধারিত পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছিল।
১০ জন যাত্রীর সঙ্গে অ্যান্টিজেন টেস্ট রিপোর্ট ছিল। যদিও বেবিচকের নির্দেশনা অনুসারে বিএমইটি কার্ডধারী প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে পিসিআর টেস্ট ছাড়াও অ্যান্টিজেন টেস্ট গ্রহণযোগ্য। তবে বিমানের সেই ১০ জনের মধ্যে মাত্র চার জনের বিএমইটি কার্ড ছিল। বাকি ছয় জনের অ্যান্টিজেন টেস্ট থাকলেও তারা বিএমইটি কার্ডধারী ছিলেন না।
এ কারণে ছয় জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। বেবিচকের নির্দেশনা অনুসরণ করলে, ওই ছয় যাত্রীকে রিয়াদ থেকেই বোর্ডিং ইস্যু করার সুযোগ নেই। এ কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ বৈধভাবে কানাডা যাবেন যেভাবে
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার কোভিড নেগেটিভ সনদ ছাড়া যাত্রী আনায় মালদ্বীপের মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সকে দুই লাখ ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা করে বিমানবন্দরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। মালদ্বীপের রাজধানী মালে থেকে কোভিড নেগেটিভ সনদ ছাড়া ২০০ বাংলাদেশি কর্মীকে নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করে মালদিভিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট।
গত ৫ ডিসেম্বর থেকে নতুন আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে আসতে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক। ফলে দেশি-বিদেশি কোনও এয়ারলাইন্স করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া বাংলাদেশে যাত্রী আনতে পারবে না।
বেবিচকের সদস্য (ফ্লাইটস্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশন্স) গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীর স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আসতে হলে সব যাত্রীকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করতে হবে এবং নেগেটিভ ফল পাওয়া যাত্রীরা আসতে পারবেন।
বিমানবন্দরে সেই নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। একই সঙ্গে বিমানবন্দরেও যাত্রীর লক্ষণ ও উপসর্গ আছে কিনা তা অনুসন্ধান করা হবে। কোনও যাত্রীর উপসর্গ দেখা গেলে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকলেও তাকে সরাসরি নির্ধারিত হাসপাতালে পরবর্তী পরীক্ষা ও চিকিৎসা এবং আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানো হবে।
আরো পড়ুনঃ মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা নবায়ন করতে পারবে ওমান প্রবাসীরা
তবে শিডিউল বাণিজ্যিক ফ্লাইট ছাড়া রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ত্রাণ, মানবিক সাহায্য, প্রত্যাবাসন, বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত কূটনৈতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য হবে না।
বাংলাদেশে অবস্থানরত কূটনৈতিক মিশনগুলোর কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রেও পিসিআর ল্যাবে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে, যা যাত্রার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা করতে হবে।
বিদেশি উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আসতে হলে তাদেরও পিসিআর ল্যাবে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে। যদি বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনার উপসর্গ না দেখা যায় তাহলে বিদেশি উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে ১৪ দিনের কম সময় অবস্থান করতে পারবেন এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশ ত্যাগ করতে পারবেন।
যদি করোনার উপসর্গ পাওয়া যায় তবে তাকে পরবর্তী পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার ও হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে। তবে কোনও যাত্রীর মধ্যে উপসর্গ দেখা না গেলে তাকে নিজ বাড়িতে গিয়ে ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের দ্বিতীয় শ্রম বাজার ওমান
বাংলাদেশি শ্রমিক যাদের বিএমইটি কার্ড আছে, তারা যে দেশ থেকে আসবেন সে দেশে পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা সহজলভ্য না হলে অ্যান্টিজেন বা অন্য কোনও গ্রহণযোগ্য পরীক্ষার সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post