মাথাব্যথা ব্রেন টিউমারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে, তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়। বেশিরভাগ মাথাব্যথার অন্য কারণ থাকে, এবং ব্রেন টিউমারের কারণে মাথাব্যথা অত্যন্ত বিরল।
শরীরের যে কোনো টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিই হলো টিউমার। তবে এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যদি মস্তিষ্কে ঘটে তবে তাকে বলা হয় ব্রেইন টিউমার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ধীমান চৌধুরী এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেছেন ব্রেইন টিউমারের লক্ষণ সম্পর্কে-
ব্রেইন টিউমার দুই ধরণের। একটি হলো বিনাইন, যা অপেক্ষাকৃত ভালো এবং অন্যটি মেলিগন্যান্ট, এটি খারাপ প্রকৃতির।লক্ষণ হিসেবে চিকিৎসকরা যা বললেন-
১. ব্রেইনের ভেতরে যখন কোন টিউমার বাড়তে থাকে তখন মাথাব্যথা শুরু হয়।
২. ব্যথার মাত্রা বেড়ে গেলে তখন বমি শুরু হয়।
৩. ব্যথা তীব্র হলে দূরের জিনিস ঝাপসা দেখা শুরু হয়। যেটা পরবর্তীতে অন্ধত্বে রূপ নিতে পারে বলে জানান ডা. ধীমান চৌধুরী।
৪. এই ঝাপসা দেখা পরবর্তীতে কোন চিকিৎসা হয় না বলেও জানান চিকিৎসক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হোন প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও বাংলাদেশে এই সংখ্যা বছরে প্রায় ৬ হাজার। তবে চিন্তার বিষয় হলো, এই ব্যধির বেশিভাগ উপসর্গ সাধারণ মাথাব্যথা কিংবা মাইগ্রেনের ব্যথা হিসেবে রয়ে যায় অবহেলিত।
যদিও শুধু মাথা ব্যথা থাকলে, বা দীর্ঘ সময় ধরে সেটা বহাল থাকলে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই লে জানান ডা. মো. শফিকুল ইসলাম। বলেন, ব্রেন টিউমার হতে হলে অন্যান্য যে উপসর্গগুলো আছে সেগুলোও থাকতে হবে। এছাড়া, ব্রেইনে টিউমার হলে ব্রেইনে চাপ পড়বে, যেটি সচরাচর বুঝতে পারা যায়।
এই চিকিৎসকের মতে, ব্রেইন টিউমারের কোনো বয়স নেই। কিছু কিছু ধরণ আছে যেগুলো শিশুদের বেশি হয়, আবার কিছু আছে বয়স্কদের বেশি হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের পর চিকিৎসা শুরু করতেও অনেকটা সময় কেটে যায়। এক্ষেত্রে দেখা যায়, অধিকাংশই অস্বচ্ছল রোগী। তাই সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপের সাথে সমন্বয় করে সুবিধা বাড়ানোর দাবি চিকিৎসকদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রেইন টিউমারের চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারের আকার, অবস্থান এবং ধরনের ওপর। আর তাই টিউমার ধরা পড়ার পর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চিকিৎসা নেয়ার বিকল্প নেই। পাশাপাশি, ব্রেইন টিউমারের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা না গেলেও রোগটি সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বাড়ানো গেলে ক্ষতি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
ব্রেইন টিউমার শনাক্তে এমআরআই করতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান করতে হয়। আর ব্রেইন টিউমার প্রতিরোধ করার সুনির্দিষ্ট কোনো উপায় নেই। তবে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। মুঠোফোনের ব্যবহার কমাতে হবে। তেজস্ক্রিয় স্থান বা উৎস থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post