হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে চালু করা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার হটলাইন কল সেন্টার। এ সেন্টারটি দেশ ও বিদেশের যেকোনো স্থান থেকে ব্যবহার করা যাবে। কল সেন্টারটিতে বাংলা ও ইংরেজিতে তথ্য ও সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আধুনিক ডায়নামিক ওয়েবসাইট, কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম) সফটওয়্যারসহ আরও বেশ কিছু নতুন সেবা যুক্ত হয়েছে।
এর মাধ্যমে প্রবাসী যাত্রীরা ঘরে বসেই ফ্লাইটের সময়সূচি, মালপত্র হারিয়ে গেলে অভিযোগ দেওয়া, উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন। সবার কাছ থেকে মতামত জানতে, অভিযোগ শুনতে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলও খোলা হয়েছে। দ্রুত তথ্য দেওয়া এবং সমস্যার সমাধানে একদল তরুণ সদস্যের সমন্বয়ে গড়া হয়েছে কোঅর্ডিনেশন টিম।
দেশের প্রধান বিমানবন্দরে এমন সেবা পেয়ে খুশি প্রবাসী যাত্রীরা। অথচ কিছুদিন আগেও এই বিমানবন্দরে প্রবাসী যাত্রীসেবা নিয়ে ছিল অভিযোগের পাহাড়। তথ্য পাওয়ার তেমন ব্যবস্থাও ছিল না। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানবন্দরে প্রবাসী যাত্রীসেবা এবং জবাবদিহি নিশ্চিতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এখন হটলাইন নম্বর ১৩৬০০-এর মাধ্যমে দেশের যে কোনো স্থান থেকে ২৪ ঘণ্টা সেবা পাওয়া যাচ্ছে। আর লং কোড +৮৮০৯৬১৪-০১৩৬০০-এ দেশ ও বিদেশ থেকে যে কেউ কল করে বাংলা ও ইংরেজিতে কল সেন্টার প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তথ্য পাচ্ছেন। তারা আরও জানান, প্রবাসী যাত্রীরা এ দুই নম্বরে কল করার পর নির্দিষ্ট বিভাগের যোগাযোগ নম্বর মোবাইলে খুদে বার্তা এবং ই-মেইলে দেওয়া হচ্ছে। পরে তারা ওই নম্বরে যোগাযোগ করে সব ধরনের তথ্য পাচ্ছেন।
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার তৌফিক হাসান জানান, সম্প্রতি তিনি মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর ব্যাগ খোয়া যায়। তাৎক্ষণিক তিনি বিমানবন্দরের কল সেন্টারের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে তাঁর মোবাইলে খুদে বার্তায় বিমানবন্দরের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ডিপার্টমেন্টের নম্বর আসে। এর পর তিনি ওই বিভাগকে বিষয়টি জানান।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, যাত্রী তৌফিকের ব্যাগ হারানোর বিষয়টি বিমানবন্দর কোঅর্ডিনেশন টিমের সদস্যরা পর্যবেক্ষণে রাখেন। দু’দিন পর ব্যাগটি পাওয়া গেলে বিমানবন্দর থেকে তাঁকে ফোন করে নিয়ে যেতে বলা হয়। তিনি ব্যাগ ফিরে পেয়ে খুবই খুশি হন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শাহ আলী নামে আরেকজন জানান, তিনি বাংলাদেশে এসে তাৎক্ষণিক অনঅ্যারাইভাল ভিসা পাবেন কিনা জানতে ওয়েবসাইটের শরণাপন্ন হন। পরে বিমানবন্দরের কোঅর্ডিনেশন টিম থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসার আগেই তাঁকে ভিসার আবেদন করতে বলা হয়।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম জানান, যাত্রীসেবায় সর্বোচ্চ মান নিশ্চিতে বিমানবন্দরে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় নতুন ওয়েবসাইট http://www.hsia.gov.bd চালু করা হয়েছে। এই ওয়েবসাইটের কন্টাক্ট (www.hsia.gov.bd/contact-us) পেজের মাধ্যমেও যাত্রীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধান, পরামর্শ এবং অভিযোগ জানাতে পারছেন।
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, শাহজালাল বিমানবন্দরের সব ফ্লাইটের তথ্য, আগমন-প্রস্থান, সাধারণ নির্দেশনাবলি, নিষিদ্ধ জিনিসপত্রের তালিকা, কাস্টম ডিউটি কর্মকর্তাদের নামের তালিকা, সিভিল এভিয়েশনের সব সেবা, ইমিগ্রেশন পুলিশ সেবা, নিরাপত্তা, প্রাথমিক চিকিৎসা, হুইলচেয়ার, ব্যাংকিং, মানি এক্সচেঞ্জসহ সব ধরনের তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া ওয়েবসাইটে সব এয়ারলাইন্সের তথ্য, বিমানবন্দরের সব স্টেকহোল্ডারের তথ্য, জরুরি প্রয়োজনে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের ফোন নম্বরসহ সর্বশেষ তথ্য দেওয়া হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post