ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়াই কুয়েতগামী বিমানে উঠে আলোচনায় আসা শিশু জুনায়েদ মোল্লার (১২) স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের পৃষ্ঠপোষকতায় বিমানে ঢাকা থেকে কক্সবাজার ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়েছে তার।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় জুনায়েদ মোল্লা ও তার চাচা ইউসুফ মোল্লা। এরপর তাদেরকে কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে নেওয়া হয়েছে।
জুনায়েদ মোল্লা গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্লার ছেলে। জুনায়েদ বলে, নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানে উঠতে পারলেও বিমানে চড়ার স্বপ্নটি থেকে ছিল। অবশেষে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে ওয়ালটন। তারা আমাকে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বিমানে করে নিয়ে এসেছে। আমার খুবই ভালো লাগছে। এজন্য আমি ওয়ালটনের প্রতি কৃতজ্ঞ।
জুনায়েদের চাচা ইউসুফ মোল্লা বলেন, আমার ভাতিজার কারণে আমিও জীবনে প্রথম বিমানে চড়তে পারলাম। ওয়ালটন আমাদেরকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসলো। আমার ভাতিজা জুনায়েদের স্বপ্ন পূরণ হলো। সেটা ছাড়াও তার কারণে যে নিরাপত্তাকর্মীদের চাকরি চলে গেল, তাদের চাকরি যেন তারা ফিরে পায়। সরকারের কাছে এই আবেদন জানাই। ওয়ালটন প্লাজার প্রতিনিধি তারেকুর রহমান বলেন, ওয়ালটন প্লাজা সব সময় স্বপ্নবাজদের পাশে থাকে। ছোট্ট শিশু বিমানে চড়ার জন্য নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে বিমানে উঠলেও চড়তে পারেনি। তার আক্ষেপের বিষয়টি ওয়ালটন প্লাজার নজরে আসলে সেই শিশুটির স্বপ্ন পূরণের জন্য বিমান যোগে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে নিয়ে আসা হয় তাকে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে নিরাপত্তায় দায়িত্বে থাকা ৮ আমর্ড পুলিশের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আমির জাফর বলেন, দুপুর ১টার দিকে নভোএয়ার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শিশু জুনায়েদ কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে তাকে ওয়ালটন গ্রুপের প্রধিনিধিরা রিসিভ করেন। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছিল ।
প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ওঠে পড়েছিল শিশু জুনায়েদ মোল্লা। পাসপোর্ট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই ১৪টি নিরাপত্তা স্তর ফাঁকি দিয়ে কুয়েতগামী বিমানে উঠে প্রায় ঘণ্টাখানেক বসে থাকে জুনায়েদ। কেবিন ক্রু তাকে সিটে বসতে দিলেও পরে তার কাছে পাসপোর্ট-ভিসা না পেয়ে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে বিমান থেকে নামিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এনিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ঢেলে সাজানো হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post