ভারত যদি সত্যিই দাপ্তরিক ও আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ইন্ডিয়া’ নামটি পরিত্যাগ করে, সেক্ষেত্রে পাকিস্তান এই নামটি গ্রহণ করতে পারে এবং নিজেদের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধের নাম পরিবর্তন করে ‘ইন্ডিয়া’ রাখতে পারে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি পোস্টকে ঘিরে দুই দেশের নেটিজেনদের মধ্যে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতের জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার বীরেন্দর শেবাগও সেই আলোচনায় জড়িয়েছেন।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) সাউথ এশিয়ান ইনডেক্স নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে একটি বার্তা পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়, ‘ভারত যদি সত্যিই ‘ইন্ডিয়া’ নাম পরিত্যাগ করে এবং যদি তাতে জাতিসংঘের স্বীকৃতি থাকে, সেক্ষেত্রে এই নামটি পাকিস্তান দাবি করতে পারে। কারণ পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদীরা বহুদিন ধরে সিন্ধ প্রদেশের নাম পরিবর্তন করে ইন্ডিয়া রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। এই প্রদেশের প্রাচীন নাম ছিল ইন্ডুস।’
এক্সে পোস্টটি প্রকাশের পর পরই তা ভাইরাল হয়ে যায় এবং শত শত নেটিজেন তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন। অনেকেই এই পোস্টকে কৌতুক বলে উল্লেখ করেছেন। অনেকে ছুড়ে দিয়েছেন বিভিন্ন মজার মন্তব্য। পোস্টের কমেন্ট বক্সে এক নেটিজেন লেখেন, ‘পাকিস্তান যদি ইন্ডিয়া দাবি করে, সেক্ষেত্রে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে দাবি করতে পারে, রাশিয়া আফগানিস্তানকে দাবি করতে পারে এবং তখন দেখা যাবে, বিশ্বজুড়ে দাবি করার চেইন রিঅ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। এই ধরনের গোলমেলে চেইন রিঅ্যাকশন শুরু করা নিশ্চিতভাবেই পাকিস্তানের করা উচিত হবে না।’
আরেক নেটিজেন লিখেছেন, ‘কেবল নাম পরিবর্তন করলেই পাকিস্তানের ভাগ্য পরিবর্তন হবে না।’ তৃতীয় নেটিজেন লিখেছেন, ‘এই বার্তার অর্থ কী? পাকিস্তান কি নিজের নাম পরিবর্তন করে ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান বা ইন্দুস্তান রাখতে চাইছে?’ ভারতের জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার বীরেন্দর শেবাগ জানিয়েছেন, পাকিস্তান আসলে ‘ইন্ডিয়া’ নামটি লুট করতে চাইছে। এ প্রসঙ্গে এক এক্স পোস্টে হিন্দি ভাষায় প্রচলিত একটি প্রবাদ উদ্ধৃত করে শেবাগ বলেন, ‘এখনও গ্রামে লোকজনের বসতি স্থাপনের কাজ শেষ হয়নি, আর এদিকে ডাকাতের দল এসে গেছে।’
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে জি২০ সম্মেলনে বিদেশি অতিথিদের রাষ্ট্রপতি ভবনে নৈশভোজের নিমন্ত্রণ দেওয়া হয়েছে ভারতের রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে। নিমন্ত্রণপত্রে ভারতের রাষ্ট্রপতির দ্রৌপদী মুর্মুর পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারত’। প্রসঙ্গত, ‘ভারত’ নামটি ভারতে প্রচলিত থাকলেও আন্তর্জাতিক ও দাপ্তরিকভাবে এই দেশটির নাম ‘ইন্ডিয়া’। তাই যে কেনো সরকারি নথিপত্রেও ব্যবহার করা হয় ‘ইন্ডিয়া’ নামটিই।
তাই জি২০ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির আনুষ্ঠানিক নিমন্ত্রণপত্রে ‘ভারত’ নামের ব্যবহার স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনেও এই ইস্যুতে গত কয়েক দিন ধরে চলছে তুমুল আলোচনা। বিজেপির নেতারা বলছেন, ‘ইন্ডিয়া’ নামটি ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অপরদিকে বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ— কিছুদিন আগে গঠিত তাদের নির্বাচনী জোট ‘ইনডিয়া’কে খাটো করতেই দেশের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।
সূত্র : এনডিটিভি
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post